Monday, May 20, 2019
লখাই হেমব্রমের রাজনীতি
এ গ্রামের সকলে এক ডাকে লখাইকে চেনে। যখন যার
অসুবিধা, লখাই ঝাঁপিয়ে পড়েছে সবসময়। আগের সরকারের আমলে লখাই কত লোকের যে রেশন
কার্ড করে দিয়েছে, বার্ধক্য ভাতায় নাম তুলিয়ে দিয়েছে—তার ইয়ত্তা নেই। লখাই লাল
পার্টি করে, সেই প্রথম থেকেই। এখনও যদিও মেম্বারশিপ পায়নি, তবু সংগঠক হিসেবে
লখাইয়ের যে নামডাক সেটা শাসকদলও জানে। আসলে এ গ্রামের প্রায় দুশো ঘর সাঁওতাল
লখাইয়ের কথা এক বাক্যে মানে। তাই এই তীব্র দখিনা হাওয়াতেও লাল পার্টি শেষ বিধানসভা
ভোটে এই গ্রামের বুথে লিড নিতে পেরেছিল। তবু লখাই এখনও পার্টি মেম্বার হতে পারেনি।
এ পার্টি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন নেতা, বড়ো নেতা, মেজো নেতা, ছোটো নেতা, আধা নেতাদের
পিছন পিছন ঘুরত ও। এখন সেদিন গিয়েছে— সমর্থকদের মতো নেতাও কমেছে এ পার্টিতে। লোকাল
কমিটি; সরকার নয়, যাদের দোর্দণ্ডপ্রতাপে আদপে চলত গ্রাম-শহর; তারা প্রায় উঠেই
গেছে। তবু লখাইয়ের নেতা বা পার্টি মেম্বার কোনওটাই হয়ে ওঠা হয়নি। লখাইয়ের বাপ
কিন্তু ছিল পার্টি মেম্বার, কৃষকসভার সেক্রেটারি। সে লোকটাই তার পড়াশুনোয় মন না
থাকা ছেলেটাকে রাজনীতির স্বাদ দিয়েছিল। পড়াশুনো ভালো না লাগলেও ছবিটা লখাই বরাবর
ভালোই আঁকে। বাবার সঙ্গে সঙ্গে শিখে নিয়েছিল দেওয়াল লেখা। এখন এ গ্রামের লাল
পার্টির সব দেওয়াল প্রচারে লখাইয়ের রং। শুধু এ গ্রাম কেন, এরিয়া কমিটির আন্ডারের অন্য
গ্রামগুলি থেকেও কাস্তে-হাঁতুড়ি-তারার সঙ্গে প্রচার লেখার ডাক পড়ে লখাইয়ের।
নারকেলের মালায় তুলি দিয়ে রং ঘাঁটতে ঘাঁটতে চুনকাম করা দেওয়ালে ও যেন ম্যুরাল গড়ে
তোলে। মুগ্ধ হয়ে দেখতে হয় ওই শিল্পকর্ম। অদ্ভুত সুন্দর ক্যালিগ্রাফি সঙ্গে রংয়ের
ব্যবহার। লখাইয়ের বড়ো ইচ্ছে একদিন দেওয়ালে নিজের নামটা আঁকে। কিন্তু এখনও ওর নেতা
হয়ে ওঠা হয়নি।
‘পরিস্থিতি ভালো নয়’— গণশক্তির পাতাটা ভাঁজ করতে
করতে বললেন বলাই মাস্টার। চা-টা তখন সদ্য মুখে নিয়েছে লখাই। বলাই চক্রবর্তী
গ্রামের স্কুলে ইংরেজি পড়ান, লোকাল কমিটি উঠে যাওয়ার পর তৈরি হওয়া এরিয়া কমিটির
নেতা উনি। চায়ের ভাঁড় হাতে করে চেয়ে থাকা লখাই ব্যাপারটা ঠিক বোঝেনি দেখে বলাই
মাস্টার বললেন— শাসক দলের সন্ত্রাসের ভয়ে কমরেডরা সব দল বদলে ওদের দলে চলে যাচ্ছে।
যারা চাপটা নিতে পারছে না, তারা রাজনীতি থেকেই বসে যাচ্ছে। বড়ো কঠিন সময় রে কমরেড।
কথা শুনে চায়ে
একটা চুমুক দেয় লখাই। তরলের সঙ্গে কিছুটা চাপ ও যেন নিজেই গিলে ফেলে। সুবল
এরমধ্যেই ওকে বেশ কয়েকবার ফোন করেছে। মাটির ভাঁড় চা-টা শুষে নেওয়ার আগেই চোঁ চোঁ
করে পুরোটা খেয়ে ফেলল লখাই। ‘শোন, তোরা সাঁওতাল পাড়ায় প্রচার শুরু করে দে। দেরি
করে লাভ নেই। দেওয়ালগুলোও দখল করে আমাদের দাগিয়ে ফেল। ওরা কিন্তু শয়তানি করতে
পারে, ভয় দেখাতে পারে। আমাদের সবকিছু গোপনে করে ফেলতে হবে’— বলাই চক্রবর্তী
নির্দেশ দেয়। লখাইয়ের মতো কয়েকজন হাঁ করে শোনে, তবে তাদের কোনও উচ্ছ্বাস দেখা যায়
না। পার্টি অফিস থেকে বের হতে হতে হতে বলাই মাস্টার বলে, ‘বিকেলে জোনালে মিটিং আছে
ক্যান্ডিডেট বাছাই নিয়ে। এই বুথটা তো এবার এসটি রিজার্ভ। পঞ্চায়েত প্রধানের পদটাও
তাই। কী যে হবে! যাক, এই বুথের জন্য তোর নামটা আমি বলেছি লখাই। দেখি পার্টি কী
সিদ্ধান্ত নেয়।’ এই পার্টি লোকটাকেই লখাই চেনে না। তবু মাস্টারের কথায় লখাইয়ের
মুখে হাসির ঔজ্জ্বল্য ধরে। চোখের সামনে নিজের নামের দেওয়াল লিখন পড়তে পারে ও।
পার্টি অফিস থেকে
বেরিয়ে মাঠের রাস্তাটা ধরে বাড়ি ফেরার সময়ই সুবলের ফোনটা আবার
এল। সাইকেল চালাতে চালাতেই একহাতে ফোনটা ধরল লখাই। পাশের গ্রামের সুবল ওর
ছোটোবেলার বন্ধু। একই পার্টি করার সুবাদে অভিন্ন হৃদয় হয়ে উঠেছিল। কিন্তু পার্টির
কিছু নেতার সঙ্গে ক্যাচালে পার্টিতে আর থাকতে পারেনি সুবল। জয়েন করেছিল এখনকার
শাসকের দলে। লখাইয়ের পার্টি বলেছিল, আগের ভোটে নাকি সাবোতাজ করেছিল সুবল, তলায়
তলায় নাকি বিরুদ্ধ পার্টির সুবিধা করে দিয়েছিল। তাই দল থেকে বিতাড়ন। কিন্তু লখাই জানে,
পার্টির উপরের নেতাদের সঙ্গে বনিবনা হয়নি বলেই ওরা সুবলকে তাড়িয়েছিল। সুবল মাঝেমাঝে
লখাইকে ফোন করে, ইদানীং আরও বেশি করছে। বলাইদারা জানে না এসব। জানলে ওকেও রাখবে না
পার্টিতে।
বাঁ হাতে হ্যান্ডেলটা ব্যালেন্স করে ডান হাতে
ফোনটা ধরে লখাই, ডান পায়ের চাপ পড়ে প্যাডেলে।
—তুরে যে কতা কয়েছিলাম, কী ভাবলি তার? ওপাশ থেকে ভেসে
আসে সুবলের কণ্ঠস্বর।
—ইবার উরা আমায় ক্যান্ডিডেট কুরতে পারে রে সুবল।
বলাইদা বুলল যে আইজ জুনালে আমার নাম বুলবে।
—শালা ঢ্যামনাদের জুনালের কতা বাইদ দে। ইমন তো
কতবার হইছে তুইও জানস।
—নারে, ইবার তো রিজার্ভেশন। পোধানও নাকি তাই।
—হ। জানি জানি। নিজেদের পিরিতের কাউরে দিবে দাঁইড়
করায়ে। তুই তখন শুধু দিওয়াল লিখ্যেই যাবি। আর যদি তুকে ক্যান্ডিডেট কইর্যেও দেয়,
তবু তো ভুটে দাঁড়াইত্যে পারবিই না তুই।
—ই আবার কি?
—হ র্যা। নমিনেশনই ফিলতে পারবি না। ইবার ভেইব্যে
দ্যাখ আমার কতাটা। আমি পার্থদার সাথে সব বুলে রেখেছি।
ফোনের ওপারে নীরবতা। প্যাডেলে চাপ পড়লে চেনের যে
ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দ তা ক্রমশ চাপা পড়ে যায় বেলের ক্রিং ক্রিং শব্দে। একহাতে সাইকেল
চালাতে চালাতে ঠিক ব্যালেন্স করতে পারে না লখাই। হ্যান্ডেল এপাশ-ওপাশ করতে করতে একসময়
পা নামিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে ও, নইলে পড়ে যেত। ফোনটা আবার কানে দেয় লখাই। মন দিয়ে শুনতে
চায় সুবলের কথা। ও এমএলএ পার্থবাবুর সম্পর্কে কী একটা বলছিল...
—শোন লখাই, আমাদের পার্টিতে এইলে এই সিটটা তুর।
আর কপাল ভালো থাকলে পোধানও হুইয়ে যেতে পারিস। আর তো তেমন এসটি ক্যান্ডিডেট নাই।
ভুটে জিতা নিয়ে তো একদম ভাবিসই না।
লখাইয়ের সাইকেলটা আবার টালমাটাল করে। অকারণে
কপালে ঘাম দেখা যায়। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ও। ফোনে অনেক কথা না বলে থাকাটা শিষ্টাচার
বিরোধী। তাই বলে, কী করি বলতো?
—দ্যাখ পার্টিতে তো অ্যাকশনের কতা হচ্ছিল। তুই
আমার বন্ধু বলে আমি তুকে ভালো রাস্তা দেখেয়ে দিচ্চি। পার্থদা বুইলে দিছে তুর বুথে
আমাদের লিড চাইই। তিমন হলে তুর ছেলেটার জন্য সিভিকে... পার্থদার সাইথ্যে কতা বুইলতে
পারি। আর উ পার্টিতে আর আছে কী-ই। ছিবর্যা পড়্যেই আছে, ছিবর্যা।
#
সুবল হালদারের ফোনটার পর অনেক ভেবেছে লখাই। কিন্তু
সিদ্ধান্তে আর আসতে পারেনি ও। জাহাজ ডুবে যাওয়ার সময় ইদুঁররা নাকি পালিয়ে বাঁচতে
চায়। সেটায় দোষ কোথায়, বুঝে নিতে চায় ও। কিন্তু মন সায় দেয় না। ওই ফোনটার পর
নিজেকে বাড়িতেই গুটিয়ে নিয়েছে। শুধু চারপাশের খোঁজখবর নেয়। ভোটের উত্তাপ তখনও
লাগেনি জনমানসে। ভোট তবু এগিয়ে যায় নিজের প্রক্রিয়ায়। নির্বাচনকে ঘিরে প্রথম
হইচইটা হল নমিনেশন জমা দেওয়ার প্রথম দিন। বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতেই পারল না।
বিডিও অফিসের চারপাশে শাসক দলের ব্যারিকেডে আটকে গেল তাদের প্রচেষ্টা। বাড়িতে বসে
সব খবরই পেল লখাই। আরও টালমাটাল হয়ে পড়ল সে। চিন্তার জট ছিঁড়ে সিদ্ধান্তের পথ বড়ো
দূর মনে হল ওর কাছে। এর চেয়ে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়াই ভালো। রাতে বউয়ের পাশে শুয়ে ছটফট
করতে করতে যখন ঘুম আসছে না, তখনই সুবলের ফোনটা আবার এল।
#
পরেরদিন মনোনয়ন জমা দিল লখাই। ঘাসফুল চিহ্ন নিয়ে।
জমা দেওয়ার পর জমায়েতের সামনে দাঁড়িয়ে ওর হাতে তিনরঙা পতাকা তুলে দিলেন বিধায়ক
পার্থবাবু। যার অনুপ্রেরণাতেই উন্নয়নের স্বার্থে নতুন দলে যোগদান লখাইয়ের। নতুন
দলে এসে নতুন উদ্যমে গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছে ও। গতরাতের চিন্তার লেশমাত্র নেই ওর মনে।
ক্ষুধার্ত পশুর মতো সবটুকু উজাড় করে ঝাঁপিয়ে পড়া। লড়াইয়ে নামলে সর্বশক্তি নিয়েই নামা উচিত। লখাইয়ের কাঁধে হাত রাখল সুবল, সেও
আজ অন্য কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছে। বাড়ি ফেরার পথে বিধায়ক একটা খাম ধরিয়ে
দিলেন লখাইকে। লখাই ফাঁক করে দেখল, ভিতরে এক বান্ডিল টাকা— ‘এটা রাখুন। ভোটের কাজে
লাগবে। আপনি আমাদের দলের সম্পদ। প্রচারে মন দিন। জয় নিয়ে একদম ভাববেন না। আমার
অঞ্চল প্রেসিডেন্ট সুবল আপনাকে সবকিছু বুঝিয়ে দেবে।’ বিধায়কের কথা শুনে খামটা
পকেটে ঢোকায় লখাই।
নতুন দলের বাইক মিছিলের সঙ্গে গ্রামে ফিরল নতুন
লখাই। দল বদলালে কি মানুষ বদলে যায়? নাকি বদলে যাওয়া মানুষই দল বদল করে— লখাই জানে
না, এসব জানার মতো সময়ও নেই ওর। বাইকগুলোর হ্যান্ডেলে পতাকা বাঁধা, পার্টির নতুন
মনোনীত প্রার্থী লখাই হেমব্রম আর অঞ্চল সভাপতি সুবল হালদারকে নিয়ে মিছিল ঢুকল
গ্রামের পার্টি অফিসে। বাইক মিছিলের অনেককেই লখাই চেনে না। এ গ্রামের লোক নয় তারা।
এ পার্টি অফিসের ভিতরেও আজ প্রথম ঢুকল লখাই।
সাজানো পার্টি অফিসের চেয়ারে বসে লখাই-সুবল।
বাকিরা ওদের ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকে। ‘পার্থদা বুলে দিয়েছে পোচার আজ থেকেই শুরু করতি
হবে। ফেলাগ আর ফেলেক্স আমি পঠায়ে দিব। দিয়াল লিকতে শুরু করে দে তুরা’— সুবল তার
ছেলেদের নির্দেশ দিতে থাকে। ‘আর লখাই তুকে ভোট ম্যানেজ নিয়ে কিচু ভাবতে হবি না। তুই
শুধু আদিবাসী পাড়াটায় জোর দে।’ নির্দেশ পাওয়ার পর আমতা আমতা করে বলে লখাই— ‘প্রথম
দিয়ালটা যদি আমিই লিকি... আসলে আমিই তো দিয়াল লিকতম। শুধু ঘাসফুলটা এঁকে দিলে...’
সবাই হইহই করে ওঠে। লখাইয়ের দেওয়াল লেখার ক্ষমতা
নিয়ে কারওর কোনও সংশয়ই নেই। ঠিক হয়ে যায় আজ লখাইয়ের বাড়ির দেওয়ালেই শুরু হবে প্রথম
দেওয়াল লিখন। পার্টির ছেলেরা চুনকাম করে প্রতীক এঁকে, স্লোগান লিখে যাওয়ার পর
প্রার্থীর নাম লিখবে লখাই নিজে। কাস্তে হাঁতুড়িতে অভ্যস্ত হাত ঘাসফুল আঁকতে কেঁপে
উঠবে কি? হইহই করে কাজে নেমে পড়ল ছেলেরা। হইচইয়ের মধ্যে সুবলকে বলা হল না লখাইয়ের,
সিভিকের জন্য ছেলের নামটা পার্থদাকে বলেছে কিনা।
চুনকাম করে, স্লোগান লিখে, প্রতীক আঁকতে আঁকতে
অনেকটা রাত হয়ে গেল। লাল পার্টির পুরোনো প্রচার চাপা পড়ে গেল গাঢ় সবুজ রংয়ে। লখাই
বাড়ি থেকে মুড়ি চানাচুর এনে খাইয়েছে ছেলেদের। কাজ শেষে লখাই বলে ছেলেদের— ‘এবার
তুমরা বাড়ি যাও। খাওয়া দাওয়া কোরো। বিশ্রাম নাও।’
—কিন্তু ক্যান্ডিডেটের নাম তো লিখা হোলো না।
—অনেক রাইত হোলো। নামটা আমি লিইখ্যে লিব। অসুবিধা
হোবে না। বাড়িতেই তো আছি...
আশ্বস্ত হয়ে চলে যায় ছেলের দল। রাতে খাওয়ার পর
বাড়ির এমারজেন্সি লাইটটা নিয়ে নিয়ে দেওয়ালের সামনে দাঁড়ায় লখাই। হাতে তুলে নেয়
ব্রাশ, তুলি, রংয়ের ডিবে। আঁচড় পড়ে সাদা চুনের উপরে। আবছা আলোয় ব্রাশ চালায় ও।
অন্ধকারটা ওর জন্য খুব একটা অসুবিধার নয়। তবু বয়স বাড়ছে। চোখে চাপ বাড়ছে। গত কয়েক
বছরে আগের পার্টির হয়ে লুকিয়েই দেওয়াল লিখেছে ও। আসলে কার কাছে লুকোতো তা ও জানে
না। হারতে হারতে মানুষ হয়তো নিজের কাছেই লুকোতে চায় এখন আর ওকে হারতে হবে না। এখন
দেওয়াল জুড়ে, ফ্লেক্স জুড়ে জ্বলজ্বল করবে ওর নাম। জয়ের স্বাদ, তৃপ্তি। লখাইয়ের ‘ল’
লিখতে গিয়ে কুঁচকে ওঠে ওর চোখ। অন্ধকার জমাট বেঁধেছে, আলো দরকার। এমারজেন্সির
আলোটা হঠাৎই বেশি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। লখাই দেখে ওর পড়াশুনো না জানা বউটা উঁচু করে
ধরেছে আলোটা। তুলির দাগ উজ্জ্বলতর হয়ে ওঠে। দু’দিন পর বউটা প্রধানের বউ হয়ে যাবে।
তখনও যেন উজ্জ্বল থাকে এ নাম। নিজের নাম দেওয়ালে পুরোনো ইচ্ছেটা পূরণ হওয়ার স্বাদ
পেয়ে জিভ লকলক করতে থাকে।
সকালে লখাইয়ের বাড়িতে ভিড় জমায় পার্টির ছেলেরা।
সারারাত লিখে লখাই তখনও ঘুমে। দেওয়ালে জ্বলজ্বল করছে অদ্ভুত সুন্দর ক্যালিগ্রাফি।
অনিন্দ্যসুন্দর এই লেখার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে পার্টির ছেলেরা, পথ চলতি
মানুষ। দেওয়ালে লেখা—‘মা মাটি মানুষের প্রার্থী কমরেড লখাই হেমব্রমকে ঘাসফুল চিহ্ন
ভোট দিন’।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment